বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
সৌদি দূতাবাসের আয়োজনে রংপুরে হিফযুল হাদীস প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত ব্যাটারী চালিত ভ্যানে মাদক পরিবহন কালে আটক ১ পিকআপে মাদক পরিবহনকালে গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার র‌্যাবের অভিযানে ফেন্সিডিলসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার সংবাদিকের পিতার মৃত্যুতে ফুলবাড়ী থানা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের শোক ধুনটে জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপনে আলোচনা সভা রংপুর ক্যাডেট কলেজের আন্তঃহাউজ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু সম্প্রীতির দেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রংপুরে ইসলামী আন্দেলনের গণ সমাবেশ কিশোরগঞ্জে বিলুপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যানকে স্বপদে বহালের দাবি ঠাকুরগাঁওয়ে নানা আয়োজনে প্রাক-বড়দিন উদযাপন নবম বারের মতো শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক হলেন প্রফেসর আজাদ ফুলবাড়ীতে মাদক কারবারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সোনালী সকাল ও সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাবের প্রীতি ম্যাচ সম্পন্ন থানচিতে মহান বিজয় দিবস পালন জলঢাকায় বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে মহান বিজয় দিবস পালন বিজয় দিবসে রাজশাহী জেলা পরিষদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন বিজয় দিবস উপলক্ষে রংপুর মহানগর জামায়াতের আলোচনা সভা লক্ষ্মীপুরে ইউএনও অপসারণের দাবীতে বৈষম্যের মানববন্ধন নড়াইলে ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাঁজাসহ দুইজন গ্রেফতার

উদ্বোধন অপেক্ষায় সিলেটে দেশ সেরা বাস টার্মিনাল

আবুল কাশেম- সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ
শীঘ্রই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই বছর পর শেষ হচ্ছে সিলেটবাসীর বহুল প্রতীক্ষিত কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের নির্মাণ কাজ।

ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মিশেলে নির্মিত এই বাস টার্মিনালকে দেশের সবচেয়ে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন বাস টার্মিনাল বলে দাবি করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আধুনিক ও উন্নতমানের সব সেবাই পাওয়া যাবে এখানে। রয়েছে বিমানবন্দরের আদলে আলাদা প্রবেশ ও বহির্গমন পথ। যাত্রীদের জন্য প্রায় দেড় হাজার আসনের বিশাল ওয়েটিং লাউঞ্জ। দৃষ্টনন্দন সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ প্রায়। চলছে উদ্বোধনের প্রস্তুতি।

সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন- এখন শুধু ফিনিশিংয়ের কিছু কাজ বাকি। উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সিলেটবাসী চান প্রধানমন্ত্রী হাত দিয়ে উদ্বোধন হোক। অথবা তার অবর্তমানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীও উদ্বোধন করতে পারেন। আগমী নভেম্বরের দিকে উদ্বোধন সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।

২০১৮ইং সালে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পের আওতায় সিসিকের উদ্যোগে ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে টার্মিনালটির কাজ শুরু হয়, পরে তা বেড়ে ৬৭ কোটি টাকাতে গিয়ে দারায়। ২০২০ইং সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০২২ইং এর জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।

কিন্তু করোনা ও বন্যার কারণে কাজ শেষ হতে দেরি হয় এসব কথা বলেন- নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডালি কনস্ট্রাকশনের সিনিয়র প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন।

হেলাল উদ্দিন বলেন- এই প্রকল্পের স্টিলের টিন থাইওয়ান থেকে আনা হয়। স্টিল স্ট্রাকচারের জন্য লোহার বার আনা চায়না থেকে। এছাড়া প্রতিটি জিনিস বুয়েটে টেস্ট করা হয়েছে। এখানে বিমানবন্দরের মতো বিশাল ওয়েটিং স্পেস রাখা হয়েছে। আছে পার্কিং জোন ও গাছপালা আচ্ছাদিত গ্রিনজোন। যেখানে কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই বাস চলাচল বা যাত্রী উঠা-নাম করতে পারবেন।

পরিবহন শ্রমিকদের জন্য মাল্টিপারপাস বিল্ডিংয়ে থাকবে বিশাল হলরুম, অফিস, মহিলাদের জন্য আলাদ ওয়াশরুম, ফিডিং জোন, রেস্ট রুমসহ বিভিন্ন সুবিধা। যাত্রীদের জন্য থাকছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সাধারণ যাত্রীদের জন্য রয়েছে ১৫০০ আসন আর ভিআইপি আসন রয়েছে ৪৮টি।

২০১৮ইং সালে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে টার্মিনালটির কাজ শুরু হয়। প্রথম এবং দ্বিতীয় ভ্যায়িয়েশনের পরে সেটি ৬৭ কোটি টাকায় গিয়ে শেষ হয়। কাজ শুরুর পর করোন কারনে কাজ বন্ধ ছিলো বেশ কয়েকমাস। করোনার পর কাজ পুরোদমে কাজ শুরু করলেও মালামান সংকটের কারনে কাজে ধীর গতি আসে এর মধ্যে সিলেটে ভয়াবহ বন্যা কারনে কাজ অনেকটা পিছিয়ে পেরে। সব মিলিয়ে এটি হবে আন্তর্জাতিক মানের দেশের অন্যতম সুন্দর একটি স্থাপনা।

৬ তলা ভিত্তির উপর ৩য় তলা কমপ্লেক্সটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী আসাম টাইপ বাড়ি আর আলী আমজদের ঘড়ির স্থাপনার সঙ্গে আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয় ঘটিয়ে নির্মিত হয়েছে এই বাস টার্মিনাল। নগরের কদমতলী এলাকায় পুরনো বাস টার্মিনালের স্থানেই ৮ একর জায়গা জুড়ে এই টার্মিনাল।

সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন- জুনেই বাস টার্মিনালের কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বিশ্ব ব্যাংক এলজিইডির মাধ্যমে অর্থায়ন করছে। সিলেটের এই বাস টার্মিনাল হবে দেশের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক বাস টার্মিনাল। নানন্দিক স্থাপত্য শৈলীও সবার নজর কাড়বে।

এছাড়া সুযোগ সুবিধাও থাকবে অনন্য। সকল কাজ শেষ, টুকিটাকি কিছু কাজ রয়েছে সেগুলো সম্পন্ন করা হচ্ছে। উদ্ভোদনে সকল প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীও উদ্বোধন করতে পারেন। তাদের সাথে কথা বলে সময় নির্ধারণ করা হবে।

সরেজমিনে টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়- শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। কারুকার্যময় লাল ইটের দেয়াল, ইট রঙের স্টিলের ছাউনি, গাছপালা আবৃত গ্রিনজোন। বিমানবন্দরের আদলে আলাদা প্রবেশ ও বহির্গমন পথ। যাত্রীদের জন্য প্রায় দেড় হাজার আসনের বিশাল ওয়েটিং লাউঞ্জ। নতুন এই টার্মিনালের নকশা করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের তিন শিক্ষক সুব্রত দাশ, রবিন দে ও মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

নকশা প্রসঙ্গে সুব্রত দে বলেন- বাস টার্মিনালের নকশায় সিলেটের ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সংমিশ্রণ ঘটানো হয়েছে। সিলেটের স্থানীয় ঐতিহ্য আসাম টাইপ বাড়ি, চাঁদনীঘাটের ঘড়ির আদলে নকশা করা হয়েছে। একই সঙ্গে আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। যাত্রীরা যাতে বাস টার্মিনালটিকে নিজেদের মনে করতে পারেন, সেজন্য সকল সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া সিলেটের ভৌগলিক বা আবহাওয়া মাথায় রেখে এর নকশা করা হয়েছে। সিলেট যেহেতু ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা সে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হয়েছে। আগে এই টার্মিনাল এসব সুবিধা ছিলো না। আশাকরি সবার এই বাস টার্মিনালটি পছন্দ হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান- পুরো টার্মিনালের প্রথম অংশের বর্হিগমন ভবনের দৈর্ঘ্য সাড়ে ৩০০ ফুট। এই অংশে ৪৮টি বাস একসঙ্গে থাকতে পারবে। ৩০টি টিকিট কাউন্টার ও নামাজের জন্য আলাদা কক্ষ। পুরুষ নারী ও বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন লোকদের ব্যবহার উপযোগী ৬টি টয়লেটও থাকছে এখানে। প্রয়োজনে হুইল চেয়ার নিয়েও টয়লেট ব্যবহার করা যাবে। উপরে উঠার জন্য রয়েছে-লিফট। খাবারের জন্য রেস্টুরেন্ট ও ফুড কোর্ট। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়া যাত্রীর জন্য আলাদা শয্যা ও ব্রেস্ট ফিডিং জোন।

টার্মিনালের দ্বিতীয় অংশে আগমন ও বহির্গমন অংশ আলাদা হলেও করিডোরের মাধ্যমে পুরো স্থাপনাকে সংযুক্ত করা হয়েছে। এই বিল্ডিংয়ের পশ্চিম-দক্ষিণ কর্নারে সড়কের সঙ্গে গোলাকার ৫ তলা টাওয়ার বিল্ডিংয়ে রয়েছে টার্মিনাল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা অফিস। যেখানে থাকবে পুরো টার্মিনালের সিকিউরিটি কন্ট্রোল ও সিসিটিভি মনিটরিং কক্ষ, পুলিশ কক্ষ এবং পর্যটন অফিস।

টার্মিনালের পেছনে তৃতীয় অংশে নির্মিত হয়েছে একটি মাল্টিপারপাস ওয়েলফেয়ার সেন্টার। যেখানে মালিক ও চালক সমিতির জন্য থাকবে ২৪ বেডের বিশ্রাম কক্ষ, গোসলের ব্যবস্থা, অফিস, লকার ব্যবস্থা, ক্যান্টিন, মিটিং ও অনুষ্ঠানের জন্য মাল্টিপারপাস মিলনায়তন।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com